শাবাশ মামু, এক্কেরে হুচিত জবাব দিছো
লিখেছেন লিখেছেন আমীর আজম ১০ অক্টোবর, ২০১৩, ১২:২৭:১৫ দুপুর
এক্কেরে হুচিত জবাব দিছো মামু.......
রাস্তার পাশে দাড়ায় আছি। প্রচন্ড রোদ। রাস্তা প্রায় ফাঁকা। একটা রিক্সাওয়ালা গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছে।
এমন সময় স্যুটেড বুটেড এক ভদ্রলোক একটা গলি থেকে বের হল। ছাতা মাথায়। রিক্সাওয়ালার উদ্দেশ্যে হাঁক ছাড়ল......
- ঐ খালি যাবা?
- না যামু না।
- এই ব্যাডা যাবি না ক্যান?
- আমার ইচ্ছা।
- ভাব তো দেখে মনে হয় জমিদারের পোলা। যাবি না তো বাড়িত গিয়া ঘুমা। রাস্তায় বের হইছস ক্যান?
- আপনের বাপের রাস্তা মনে হয়?
- মুখ সামলে কথা বল ব্যাটা ..........।
- আপনে মুখ সামলে কথা বলেন। রাস্তায় হাঁটার সময় কি কোনদিন কোন রিক্সাওয়ালা আপনারে জোর করে রিক্সায় উঠাতে চাইছিল। আপনারে কি কেউ কোনদিন বলছে ঐ মিয়া রিক্সায় উঠবেন না তো রাস্তায় হাটতে বাইর হইছেন ক্যান?
কঠিন যুক্তি। এক্কেরে তাজ্জব বনে গেলুম। আর এদিকে ভদ্রলোককে দেখি মুখ কাঁচুমাঁচু করে চলে যাচ্ছে।
...............................................
রাস্তার পাশে ছোট একটা চায়ের দোকান। দোকানের মালিক প্রতিবন্ধী। চোখে কম দেখেন। আর একটা চোখ জন্ম থেকে নষ্ট। খদ্দের কে চা দেয়ার সময় গ্লাসটাকে চোখের সামনে নিয়ে আসতে হয় পরিমাণ দেখার জন্য।
এখানে বসে প্রায়ই চা খাই। ভালই লাগে। লোকটার প্রতি হয়ত কিছু করুণাও প্রদর্শন করি।
একদিন দুইটা ছেলে আসল দোকানে। দেখে বেশ ভদ্র মনে হল। কিন্তু মুখের ভাষা ভাল মনে হল না। বলল.......
- ঐ ব্যাটা ফার্স্টক্লাস কইরা দুইটা চা বানায়া দে।
- দুঃখিত। এখানে ফার্স্টক্লাস চা পাওয়া যায় না। এখানে দিন মজুরদের থার্ডক্লাস চা। খাইলে খান না খাইলে রাস্তা মাপেন।
লোকটির ব্যাক্তিত্ব দেখে তাজ্জব বনে গেলুম। আর মনে মনে হাত তালি দিয়ে বললুম শাবাশ মামু, এক্কেরে হুচিত জবাব দিছ।
সমাজের খেটে খাওয়া মানুষ গুলো কি আমাদের কাছে একটু ভাল ব্যাবহার আশা করতে পারেন না।
বিষয়: বিবিধ
১৩৫৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন